ব্রহ্মপুত্র নদের চীনা অংশে বাঁধ দিয়ে ৬০ গিগাওয়াটের বিশাল পানিবিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প শুরুর কথা ঘোষণা করেছে চীন। ইতোমধ্যেই প্রাথমিক কাজও শুরু করে দিয়েছে দেশটি। ব্রহ্মপুত্র নদকে চীনে ইয়ারলুং জাংবো বলে ডাকা হয়। চীন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত ২৮৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ ব্রহ্মপুত্র নদ। হিমালয় থেকে উৎপত্তি হয়ে তিব্বতের ভেতর দিয়ে তা ব্রহ্মপুত্র নামে অরুণাচল হয়ে ভারত, বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। আর ভারতের প্রবেশ মুখেই পানি বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য নদীর ওপর আড়াআড়ি বাঁধ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে চীন।চীনের শক্তি উৎপাদন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা জানায়, নদের নিম্নগতিপথের শুরুতে একটি বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পের পরিকল্পনা করছে বেইজিং। যেটি দেশের একাধিক অংশের পানি সরবাহের প্রধান উৎস হয়ে দাঁড়াবে এবং দেশটির শক্তি উৎপাদনের ইতিহাসে এটি মাইলফলক হয়ে উঠবে। এর আগে ভারত বারবার চীন সরকারকে অনুরোধ করেছে, নদীর উচ্চগতিতে যেন কিছু বানানো না হয়।আগামী বছর ১৪তম এই পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। ভারতীয় গণমাধ্যম বলছে, আগামী বছরের শুরুর দিকে ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসে-এনপিসি আনুষ্ঠানিক অনুমোদনের পর এই পরিকল্পনার বিস্তারিত প্রকাশ করা হবে।তিব্বতে এই নদীর ওপর বাঁধ দেওয়ার সিদ্ধান্তে চিন্তা বেড়েছে ভারতের। কারণ ব্রহ্মপুত্রের নিম্নধারার বেশিরভাগটাই বয়ে গিয়েছে ভারতের মধ্যে দিয়ে। বাঁধের কারণে ভাটিতে ও শুষ্ক মৌসুমে পানির প্রবাহ কমে যেতে পারে। এতে একটি ব্রহ্মপুত্রবাসীদের জীবনে ও জীববৈচিত্রে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটতে পারে।উল্লেখ্য, ব্রহ্মপুত্র হিমালয় পর্বতের কৈলাস শৃঙ্গের নিকটে মানস সরোবর থেকে উৎপন্ন হয়ে তিব্বত ও আসামের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কুড়িগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ময়মনসিংহের দেওয়ানগঞ্জের কাছে ব্রহ্মপুত্র দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বাঁক নিয়ে ময়মনসিংহ জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ভৈরববাজারের কাছে মেঘনায় পড়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদীর সর্বাধিক প্রস্থ বাহাদুরাবাদে ১০৪২৬ মিটার। এটিই বাংলাদেশের নদীগুলোর মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করেছে। ব্রহ্মপুত্রের প্রধান শাখা হচ্ছে যমুনা।ব্রহ্মপুত্রের চীনা অংশে বাঁধ দেয়ার ফলে বাংলাদেশেও এর প্রভাব ব্যাপক আকার ধারণ করবে বলে মত বিশ্লেষকদের।
ব্রহ্মপুত্র নদে বিশাল পানিবিদ্যুৎ প্রকল্প চীনের
