“আল আকসা মসজিদ বা বাইতুল মুকাদ্দাস সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য”

আল আকসা মসজিদটির অপর নাম বায়তুল মুকাদ্দাস। জেরুসালেমের পুরনো শহরে অবস্থিত ইসলামের তৃতীয় পবিত্রতম স্থান। এটির সাথে একই প্রাঙ্গণে কুব্বাত আস সাখরা, কুব্বাত আস সিলসিলা ও কুব্বাত আন নবী নামক স্থাপনাগুলো অবস্থিত। স্থাপনাগুলো সহ এই পুরো স্থানটিকে হারাম আল শরিফ বলা হয়। এছাড়াও স্থানটি “টেম্পল মাউন্ট” বলে পরিচত এবং ইহুদি ধর্মে পবিত্র বলে বিবেচিত হয়।

এ পবিত্র মসজিদ থেকেই হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) উর্ধাকাশে তথা মেরাজ গমন করেছিলেন। নবী করীম (সা.) মিরাজ গমনের সময় আল আকসায় অতীতের সব নবী-রাসূলের জামাতে ইমাম হয়ে দু’রাকাত নামাজ আদায় করেন। মহান আল্লাহ এ সম্পর্কে বলেছেন, ‘সকল মহীমা তার- যিনি তার বান্দাকে এক রাতে মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত ভ্রমণ করিয়েছিলেন, যার চতুর্পার্শ্বকে আমি বরকতময় করেছি। (আর এই ভ্রমণ করানোর উদ্দেশ্য হচ্ছে) যাতে আমি আমার নিদর্শন তাকে প্রদর্শন করি। ’ -সূরা বনী ইসরাইল: ১

৬৩৮ খ্রিস্টাব্দে সমগ্র বায়তুল মোকাদ্দাস এলাকা মুসলমানদের দখলে আসার পর মুসলমান শাসকরা কয়েকবার এ মসজিদের সংস্কার করেন। কিন্তু ১০৯৬ সালে খ্রিস্টান ক্রুসেডাররা ফিলিস্তিন দখল করে নেওয়ার পর আল আকসা মসজিদের ব্যাপক পরিবর্তন করে একে গীর্জায় পরিণত করে। এরপর ১১৮৭ খ্রিস্টাব্দে মুসলিম সেনাপতি গাজী সালাহউদ্দিন আইয়ুবী তা পুনরুদ্ধার করেন।

আল আকসা মসজিদের গুরুত্বের আরও একটি বড় কারণ হলো প্রথম থেকে হিজরত পরবর্তী ১৭ মাস পর্যন্ত মুসলমানরা আল আকসা মসজিদের দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করতেন। পরবর্তীতে মহান আল্লাহর নির্দেশে মুসলমানদের কেবলা মক্কার দিকে পরিবর্তিত হয়। আল আকসা মসজিদের অর্থ হচ্ছে- দূরবর্তী মসজিদ।

একদল ইতিহাসবিদ মনে করেন, আল আকসা মসজিদ মূলত হজরত আদম (আ.)-এর মাধ্যমেই তৈরি হয়, যা পরবর্তী নবীরা পুনর্নির্মাণ ও সংস্কার করেন। হজরত ইবরাহিম (আ.) কর্তৃক কাবা গৃহ নির্মাণের ৪০ বছর পর হজরত ইয়াকুব (আ.) আল আকসা মসজিদ নির্মাণ করেন। এরপর খ্রিস্টপূর্ব ১০০৪ সালে হজরত সোলায়মান (আ.) এই মসজিদটির পূণর্নির্মাণ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *